নতুন মহাকাশ তত্ত্ব

আমার মহাকাশ তত্ত্ব
~মহর্ষি মহামানস



একটি বুদবুদ (Bubble)-এর মতো বহুমাত্রিক (Multidimensional)
অবাধ বা প্রায় অবাধ, আপাতদৃষ্টিতে শূন্য পরিসর বা ফাঁকা স্থান অস্তিত্বকে মহাকাশ বলা হয়ে থাকে।

মহাবিস্ফোরণের মধ্য দিয়ে মহাবিশ্ব সৃষ্টি হওয়ার সাথে সাথেই আমাদের এই মহাকাশ (Space) অস্তিত্ব সৃষ্টি হয়েছে। এবং মহাবিশ্বের সাথে সাথে ক্রমশই এই মহাকাশ প্রসারিত হয়ে চলেছে। এই মহাকাশ আসলে একপ্রকার অদৃশ্য অননুভূত--- বিশেষ কম্পাঙ্কের কণা দিয়ে গঠিত এক বিশেষ অস্তিত্ব। 'স্টেমসেল'-এর মতো এই কণাগুলি প্রয়োজনে চক্রবৃদ্ধিহারে নিজেদের বৃদ্ধি ঘটিয়ে থাকে। বিজ্ঞান এখনো তাকে আবিষ্কার করতে সক্ষম হয়নি।

সাধারণভাবে, এই মহাকাশ আমাদের কাছে অদৃশ্য অননুভব‍্য এক অস্থিত্ব বিহীন অস্তিত্ব। তাই একে মহাশূন্য বলা হয়ে থাকে। তাইবলে, এই মহাকাশ পরম শূন্য নয়। পরমশূন্য রয়েছে মহাবিশ্বের বাইরে। যার মধ্যে মহাসৃষ্টি তথা মহাবিশ্ব অবস্থান করছে।

আমাদের এই মহাকাশ মোটেও শূন্য নয়। সে তার নিজস্ব অস্তিত্ব ছাড়াও, নানারূপ মহাজাগতিক রশ্মি-- শক্তি, কণা এবং বিকিরণে ভরে আছে। সেইসব শক্তি ও কণাদের মধ্যে ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া, আকর্ষণ-বিকর্ষণ সহ বিভিন্নরূপ কার্যকলাপে সাধারণত সে অংশগ্রহণ করে না। সে নিরপেক্ষ-- নিষ্ক্রিয় নির্বিকার।

মহাকাশের মধ্যেই যে বিশ্বের সমস্ত কিছু অবস্থান করছে, শুধু তাই নয়, সমস্ত কিছুর মধ্যে বা ভিতরও মহাকাশ রয়েছে বা বিরাজ করছে। মহাকাশ কোন কিছুকে ধারণ করে না--- বর্জনও করে না।

মহাবিশ্ব সৃষ্টি হওয়ার সাথে সাথেই--  মহাকাশ ছাড়াও আরো দুটি অব‍্যক্ত অননুভবনীয় স্বতন্ত্র ভার্চুয়াল অস্তিত্বের সৃষ্টি হয়েছে। তা হলো 'সময়' আর 'ভাগ্য' (সময় ও ভাগ্য প্রবন্ধ দ্রষ্টব্য)। কেউ কেউ মহাকাশ আর সময়-কে মিলিয়ে গুলিয়ে ফেলেন। কিন্তু  সময় ও মহাকাশ দুটি স্বতন্ত্র অস্তিত্ব। সময় আর মহাকাশের মধ্যে বড় সম্পর্ক হলো-- তারা একইসঙ্গে একই ঘটনা থেকে জন্ম নিয়েছে।

জলাশয়ের জলের ভিতরে মাছ যেমন, অনেকটা তেমনই এই মহাকাশের মধ্যে আমাদের অবস্থান। আমাদের সবদিকে--- ভেতরে ও বাইরে রয়েছে মহাকাশ। এই অরূপ মহাকাশকে কেউ কেউ তাদের ধারণা বা কল্পনা মতো বিভিন্ন রূপে বর্ণনা করেছেন। কিন্তু সেগুলির কোনটিই এই রহস্যময় মহাকাশের প্রকৃত রূপ বা অবয়ব নয়। মহাকাশ এখনও আমাদের কাছে অধরাই রয়ে গেছে।

এ প্রসঙ্গে অল্পবয়সে আমার লেখা একটি কাব্যগ্রন্থের ছোট্ট একটি অংশ মনে পড়ে গেল!

মহাশূন্য কেমন!?
বারবার একই প্রশ্ন---
তারপর শূন্য দৃষ্টি মেলে
চেয়ে থাকো বেশ কিছুক্ষণ।
খেই খুঁজে পাও না---
কি করেই বা পাবে!
এখনো অনেক পথ বাকি---
সৃষ্টির রথ এখনো অন্ধকারে
হাতরে হাতরে ছুটে ছুটে মরে
আত্মানুসন্ধানের সেই উত্তরের আশায়। ---অংশানুক্রমে, বারবার
যে প্রশ্ন উঁকি দেয়--- তোমারও ভিতরে।


মহাকাশকে বুঝতে হলে, একেবারে মূল থেকে ধাপে ধাপে এগিয়ে যেতে হবে। পরম শূন্যের মধ্যে আদিসত্তার অবস্থান। আর তার মধ্যেই মহাবিশ্ব সহ মহাকাশ জন্ম নিয়েছে (আমার সর্বাধুনিক সৃষ্টিতত্ত্ব দ্রষ্টব্য)। আমার সৃষ্টিতত্ত্বের শুরুতেই পরমশূন‍্য সম্পর্কে একটা সংক্ষিপ্ত বর্ণনা আছে। বর্ণনাটি এইরূপ:

পরমশূন্য! আদি-অন্তহীন নিরাকার প্রকৃত শূন্য। আমাদের জানা মহাশূন্য নয়। মহাবিশ্বের এলাকা ছাড়িয়ে আদিসত্তার অঞ্চল পেরিয়ে--- বিদ্যমান যে অনন্ত আকাশ--- সেই পরমশূন্য! নিস্তব্ধ-- নিস্তরঙ্গ-- নির্বিকার অস্তিত্বহীন এক অস্তিত্ব। অপরিবর্তিত অবিনাশী অবিচল সেই শূন্যে--- এখানকার কোনো সচল গতিশীল বস্তু বা শক্তি প্রবেশ করতে অক্ষম।

সেই পরমশূন‍্যের মধ্যে আদিসত্তার অবস্থান। আর সেই আদিসত্তার মধ্যেই জন্ম নিয়েছে মহাসৃষ্টি। বহুসংখ্যক মহাবিশ্ব নিয়ে এই মহাসৃষ্টি। তারমধ্যে একটি হলো আমাদের মহাবিশ্ব।


আদিসত্তার (অস্তিত্ব) সম্পর্কে আমার সৃষ্টিতত্ত্বে যেমন বর্ণনা আছে:
    সেই পরমশূন্যের মাঝে একটি নির্দিষ্ট সীমা নিয়ে আদিসত্তার অবস্থান। আদিসত্তা প্রধানত আদি আদিকণা ---পরমকণা--- আদিশক্তি দিয়ে গঠিত। এছাড়াও তা' আদি বস্তুকণা, অসংখ্য যুগ্ম এবং বিকিরণে পরিপূর্ণ।

আদি বিস্ফোরণের (সৃষ্টিতত্ত্ব দ্রষ্টব্য) মধ্য দিয়ে সৃষ্টি হয়েছে বহু মহাবিশ্ব-বীজ দিয়ে গঠিত ফল রূপ--- প্রাক মহাসৃষ্টি। আর, একসময় এই ফলটির মধ্যে থাকা বিশ্ববীজগুলির মধ্যে সংঘটিত হয় মহাবিস্ফোরণ। যা থেকে ক্রমশ অঙ্কুরিত হয়ে--- অসংখ্য মহীরুহের মতো  বিকশিত হয়ে চলছে মহাবিশ্বগুলি।

আদি কণার বিভিন্ন মাত্রার কম্পাঙ্ক থেকেই বিভিন্ন মৌলিক কণা ও শক্তি সৃষ্টি হয়েছে। কণার এই কম্পাঙ্কের মূলে রয়েছে কম্পিউটার প্রোগ্রামিং কোডের মতো একপ্রকার প্রোগ্রামিং কোড।

এখানে উল্লেখ করা প্রয়োজন, আদিকণার কোনো 'ডাইমেনশন' নেই। আদিকণা হলো এক ভার্চুয়াল অস্তিত্ব, যা সৃষ্টি হয়েছে ঐরূপ প্রোগ্রামিং কোড দ্বারা অথবা যার মূলে রয়েছে প্রোগ্রামিং কোড। আদিকণা থেকে সৃষ্ট বিভিন্ন কম্পাঙ্কের বিভিন্ন কণাগুলি আসলে অব‍্যক্ত প্রোগ্রামিং কোডের মূর্ত রূপ।

Comments

Popular posts from this blog

S-Existence and its Contrary Existence

অত্যাধিক যৌন উত্তেজনা ও উন্মাদনা মানবসমাজের এক জ্বলন্ত সমস্যা! ~মহর্ষি মহামানস

ধর্ষণ : এক জ্বলন্ত সমস্যা এবং তার সমাধান